করোনা যুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধাদের মাঝে কেমন আছে সাংবাদিকরা

বিশেষ প্রতিবেদক : জাতির এই করোনা ক্লান্তিলগ্নে, করোনা প্রতিরোধে যে সংস্থা গুলি সম্মুখ যুদ্ধ করে রাষ্ট্রের অর্পিত দায়িত্ব যথাযতভাবে পালন করে যাচ্ছে তাদের উৎসাহ উদ্দীপনা যোগাতে সাংবাদিকদের ভুমিকা সীমাহীন। সাংবাদিকরাও যোদ্ধা, কলম যোদ্ধা। জনসচেতনতা বৃদ্ধি অগ্রনী ভূমিকা পালনে সাংবাদিকরাই মহানায়ক। রাষ্ট্রের প্রধানরা ইতিমধ্যেই সাংবাদিকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে।

প্রশ্ন উঠে আসে, কেমন আছে সাংবাদিকরা। বিশ্লেষণে দেখা যায় অধিকাংশ সাংবাদিকরাই ভালো নেই। সাংবাদিকরা গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যে পরিমাণ পারিশ্রমিক পায়, তা প্রয়োজনের তুলনায় সামান্য। অনেকেই এই পেশাকে ভালোবেসে সারাটি জীবন কাটিয়ে দিচ্ছে। সম্মানে স্নিগ্ধতার মাথা উঁচু থাকলেও অভাব-অনটনে কেটে যাচ্ছে জীবন। প্রকাশ হয়না, অন্তরালে থেকে যায় সকল অভিযোগ।
এ যেন, নিজের কাছে নিজের অভিযোগ।
একজন সাংবাদিক শুভাকাঙ্খী হিসেবে কি করতে পারলাম। মেসেঞ্জার খুললেই মন খারাপ হয়ে যায়। সামর্থ অনুযায়ী যাদেরকে ভালোবেসে যাদের পাশে দাঁড়াতে পেরেছি, অনেক কিছু করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকলেও তা পাচ্ছি না। বেশ কয়েকটি একাউন্ট থাকলেও আজ প্রতিটি একাউন্ট শূণ্য।

জাতির এই ক্লান্তিলগ্নে কারো একাউন্ট ভারী হচ্ছে, কারো একাউন্ট শূণ্য হচ্ছে। অনেকেই ভালো আছে, অনেকে ভালো নেই। একজন আদর্শ সাংবাদিকের বাস্তব জীবনে সম্মান ও অসম্মানের সিক্ত ও তিক্ত অভিজ্ঞতা দুটোই মেলে প্রচুর। তার কাছে পৃথিবীর তাবৎ আগ্নেয়াস্ত্রের চেয়ে একটি শাণিত কলম অধিক শক্তিশালী। চব্বিশ ঘন্টা প্রতিটি সাংবাদিকের কলম যদি এক স্কেলে চলে তাহলে দ্বিতীয় দিন থেকে রাষ্ট্রের নীতি-নির্ধারক হবে সাংবাদিকরা। সাংবাদিকদের মাঝে বিভাজন সৃষ্টি করা প্রাচীন থেকে বর্তমান পৃথিবীর মড়লদের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুক্ষ অপকৌশল। ক্রম ধারাবাহিকতায় সময়ের পরম পরায় সাংবাদিকদের নামের আগে পরে উদ্দেশিতভাবে কিছু শব্দ জুড়ে দিয়েছিলো, যা এখনো চলমান। যেমন হলুদ সাংবাদিক, অপসাংবাদিক, সাংঘাতিক, আরো কত কি ?
সুযোগটাকে কাজে লাগাচ্ছে প্রশাসন-জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গরা। তাদের কাছে সাংবাদিক যেনো বিনামাইনে পেট চুক্তি। সাংবাদিকদের নিয়ে তাদের চিন্তা একশ টাকা হলে ছবি,পাঁচশো টাকা ফেসবুক, একহাজার টাকা পত্রিকা, পনেরোশো টাকা হলে চ্যানেলে সাক্ষাৎকার।

অধিকাংশ গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান গুলি সাংবাদিকদেরকে যথাযত পারিশ্রমিক দিতে পারে না, তাই বর্তমান গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান গুলিতে দক্ষ যোগ্য লোকের চাইতে অদক্ষ অযোগ্য লোকের বিচরণ অধিক, এদের অনেকেই জানে না সংবাদ কি? সাংবাদিকতা কি?

অনেকে জেনে বুঝে, অনেকেই না জেনে-না বুঝে মন যা চাচ্ছে তাই লিখছে। আর অযোগ্য অদক্ষদেরকে ব্যবহার করা অধিক সহজ। এই সুযোগটাকেই কাজে লাগাচ্ছে কতিপয় প্রশাসনিক-রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গরা।

উত্তর-পূর্ব-পশ্চিম-দক্ষিণ চারদিক থেকে চলমান নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক নিয়ম আইন ও প্রকৃতগত নিয়মাবলী প্রতিদিনের একই চিত্র যাহা যুগে যুগে শতাব্দিতে অববাহিকা এক কথায় যাহা চলমান তাহা সংবাদ নয়, ‘সূর্য পূর্ব দিকে উঠে পশ্চিমে অস্ত যায় এটা সংবাদ নয় এটি প্রকৃতির নিয়ম’। প্রশাসনিক কর্মকর্তা-জনপ্রতিনিধি যখন রাষ্ট্রের অর্পিত দায়িত্ব পালন করে তখন সেটা সংবাদ বা খবর হতে পারে না। কারণ রাষ্ট্র তাদের স্ব-স্ব পদে নিয়োগ দিয়েছে অর্পিত দায়িত্ব পালন করার জন্য।

যদি কোন প্রশসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-জনপ্রতিনিধি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, নিয়মের অনিয়ম করে তাহাই খবর বা সংবাদ। এক কথায় চলমান নিয়মের অনিয়ম, অস্বাভাবিক ঘটনাই সংবাদ।
সাংবাদিকের কাজ হলো অগোচরে পড়ে থাকা তথ্যকে সকলের গোচরে নিয়ে আসা।
সাংবাদিকতা কথাটি উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে বস্তুনিষ্ঠতা কথাটি বার বার চলে আসে। সাংবাদিকতার প্রাথমিক যুগে বস্তুনিষ্ঠতার খুব একটা বালাই ছিলোনা। ব্যক্তি নিন্দা, বিপক্ষের বিষোদগারই ছিলো তখনকার সাংবাদিকতার মূল উপজিব্য বিষয়।
অতপর সাংবাদিকতার ক্রমবিকাশের ধারায় সৎ সাংবাদিকতার প্রশ্নটি জোড়দার হয়েছে

ঘটনা যেভাবে ঘটেছে ঠিক সেভাবে বর্ননা করতে হবে।
ব্যক্তিগত মতামতকে প্রশ্রয় না দেওয়া, পক্ষালম্বন না করা, বিচারকের মত ন্যায় বিচারের দৃষ্টিভঙ্গিতে ভারসাম্যপূর্ণভাবে রিপোর্ট হোক সাংবাদিকদের অঙ্গিকার৷

Design a site like this with WordPress.com
শুরু করুন