ভক্ত কেন দুঃখ পায় ? কেন ভক্তি করতে হয় ?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ভগবান বড় বড় পাপ ভোগ করিয়ে ভক্তকে শুদ্ধ করে আপন করে নেন । এইজন্য ভক্তের জন্মের পূর্বে তার ভাগ্য (প্রারব্দ ) বানানোর সময় বাছাই করে বড় বড় পাপ লিখে দেন যাতে করে ভক্ত খুব তাড়াতাড়ি শুদ্ধ হয়ে উঠতে পারেন ।
দ্বিতীয় কারন হলো এই যে , ভক্তি যত প্রবনতার সঙ্গে দুঃখের সময় আসে , ততটা প্রবনতা নিয়ে সুখের সময় আসেনা ।
মানুষ যখন সুখী থাকে তখন ভগবানের কথা স্মরনে থাকেনা । না থাকাটাই স্বাভাবিক কারন তখন অভাব থাকেনা । সংসারে মমতাহীন , আশাহীন , মোহহীন ইত্যাদি কেবল দুঃখদায়ী পরিস্থিতির মধ্যেই হয় । সুখের সময় তো মমতা , আশা , মোহ , কামনা ইত্যাদি কেবল বেড়ে যায় এবং আমরা ভগবান থেকে বিমুখ হয়ে যাই ।
যারা সত্যিকারের মন এবং ভাব নিয়ে ভগবানের সেবা করেন তারা নিজেরাই অনুভব করতে পারেন যে , সুখ হলো ভক্তি মার্গের একমাত্র বাধা । এইজন্য দুঃখ বড় কৃপাতেই পাওয়া যায় , কেননা দুঃখ ভক্তি মার্গের অত্যন্ত সহায়ক হয় ।
মাতা কুন্তি দেবী এইজন্যই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কাছে বরদান হিসেবে দুঃখকেই চেয়েছিলেন ।
এইজন্য যাদের জীবনে ভক্তি আসে , অধিকতর তাদের জীবনেই অনেক বেশী দুঃখ আসে ।
তারমানে এই নয় যে আমরা দুঃখের ভয়ে ভক্তিই করবো না । যেই দুঃখ ভক্ত সহ্য করে তা তো তাকে এমনিতেই সহ্য করতে হবে এবার সে ভক্তি করুক বা না করুক , আজ নয় তো কাল , এই জনমে নয় তো পরের জনমে । ভগবান নতুন করে তো কোনো দুঃখ নির্মান করে দেন না , বরং ভক্তি করলে ভক্ত বড় বড় দুঃখগুলি ছোট ছোট আকারে সহজেই ভোগ করে পার পেয়ে যাবেন ।
সত্যিকারের ভক্ত তো দুঃখের সময় দুঃখী হয়ই না । আমাদের যদিও মনে হতে পারে যে , সে অনেক দুঃখদায়ী পরিস্থিতির মধ্যে আছে , কিন্তু বাস্তবিক সত্য হলো এই যে , প্রকৃতপক্ষে সে মনের দিক থেকে নিশ্চিত হয়ে সেই দুঃখ নিয়ে ভগবানের কুলে বসে থাকে ।
এইজন্য এমনটা কখনোই ভাবা উচিৎ নয় যে , ভক্তি করলে কেবল দুঃখই পাওয়া যাবে , তাই ভক্তিই করবো না ।
ভক্তি তো করতেই হবে , এই জনমে নয় তো পরের জনমে । কারন আমাদের বাস্তবিক লক্ষ্য , বাস্তবিক চাহিদা তো ভক্তিই ।
এই জনমেই যদি ভক্ত হয়ে যাই তাহলে আগামীতে আসা জন্মগুলিতে নাজানি কত দুঃখ কষ্ট থেকে আমরা সহজেই পার পেয়ে যাবো । তাই চলুন সবাই মিলে খুব ভজন করি এবং নিজেদের জন্মকে সার্থক করে তুলি –
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে ।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে ।।